প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর দুর্বলতা এবং অতিরিক্ত চাপকে কৌশলগতভাবে কাজে লাগাচ্ছে হুতি যোদ্ধারা। এর মাধ্যমে তারা বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জলপথ— লোহিত সাগরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পথে অগ্রসর হয়েছে। ওই এলাকায় এখন আর যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা বলয় কার্যকরভাবে কাজ করছে না বলে দাবি করা হয়েছে।
ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট জানায়, মিত্রদের সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক হামলা সত্ত্বেও ইয়েমেনি বিদ্রোহীরা প্রায় দুই বছর ধরে লোহিত সাগরের চলাচল বিপর্যস্ত করে রেখেছে। ফলে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রধান রুট হিসেবে পরিচিত এই জলপথ পরিহার করে অনেক জাহাজই এখন দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ অফ গুড হোপ ঘুরে দীর্ঘ ও ব্যয়বহুল পথ অবলম্বন করছে।
বিশ্লেষকদের মতে, হুতিদের এই অভিযাত্রা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উদ্বেগজনক। কারণ হিসেবে তাঁরা উল্লেখ করেছেন হুতিদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি, ড্রোনের ব্যবহার এবং অত্যাধুনিক ভূমিভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার সফল প্রয়োগকে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিলাসবহুল ও প্রযুক্তিনির্ভর যুদ্ধজাহাজ এবং বিমানবাহী রণতরীগুলো এই নতুন ধরণের যুদ্ধ পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছে না। এগুলোকে অভিযোজনযোগ্য করে তুলতে অনেক সময় লেগে যেতে পারে।
এদিকে, লোহিত সাগরের জটিল পরিস্থিতির পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রকে একযোগে সামাল দিতে হচ্ছে চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক হুমকিকেও। চীনের ৪০০টিরও বেশি যুদ্ধজাহাজের বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় নৌবহরে রয়েছে মাত্র ২০০টি। পুরনো শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ পরিকাঠামোর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে চীনের সাথে সমানে সমানে পাল্লা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
তবুও যুক্তরাষ্ট্র জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ফিলিপাইনের মতো মিত্রদের সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে। তাইওয়ানকেও রক্ষার অঙ্গীকারে তারা দৃঢ়। কিন্তু এসব অঙ্গীকার সত্ত্বেও লোহিত সাগরের মতো একটি কৌশলগত জলপথে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থতা ওয়াশিংটনের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে।
0 মন্তব্যসমূহ